ব্রজবিলাস

উইকিসংকলন থেকে

ব্রজবিলাস।

যৎকিঞ্চিৎ অপূর্ব্ব মহাকাব্য


কবিকুলতিলকস্য

কস্যচিৎ উপযুক্ত ভাইপো্স্য প্রণীত


দ্বিতীয় সংস্করণ

কলিকাতা

সংস্কৃত যন্ত্রে মুদ্রিত

এস. কে. লাহিড়ী এণ্ড কোং কর্ত্তৃক প্রকাশিত।

৫৪ নং কলেজ ষ্ট্রীট।

স ন ১ ২ ৯ ১ সা ল।

দ্বিতীয় সংস্করণের বিজ্ঞাপন।


ব্রজবিলাস নিঃশেষিত হইয়াছে। কিন্তু, গ্রাহকবর্গের আগ্রহনিবৃত্তি হয় নাই। এজন্য অনেকের অনুরোধপরতন্ত্র হইয়া, এই মহাকাব্য পুনরায় মুদ্রিত করিতে হইল।

 ফাজিলচালাকেরা স্থির করিয়া রাখিয়াছেন, তাঁহাদের মত বিজ্ঞ, বোদ্ধা, যোদ্ধা, ভূমণ্ডলে আর নাই। তাঁহারা যে বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত করেন, অন্যে যাহা বলুক, তাঁহাদের মতে, তাহা অভ্রান্ত ও অকাট্য। শুনিতে পাই, আমার এই ক্ষুদ্র মহাকাব্য খানি অনেকের পছন্দসই জিনিস হইয়াছে। সেই সঙ্গে, ইহাও শুনিতে পাই, ফাজিলচালাকেরা রটাইতে আরম্ভ করিয়াছেন, ইহা বিদ্যাসাগরের লিখিত। যাঁহারা সেরূপ বলেন, তাঁহারা যে নিরবচ্ছিন্ন আনাড়ি, তাহা, এক কথায়, সাব্যস্ত করিয়া দিতেছি।

 এক গণ্ডা এক মাস অতীত হইল, বিদ্যাসাগর বাবুজি, অতি বিদকুটে পেটের পীড়ায় বেয়াড়া জড়ীভুত হইয়া, পড়িয়া লেজ নাড়িতেছেন, উঠিয়া পথ্য করিবার তাকত নাই। এ অবস্থায়, তিনি এই মজাদার মহাকাব্য লিখিয়াছেন, এ কথা যিনি রটাইবেন, অথবা, এ কথায় যিনি বিশ্বাস করিবেন, তাঁহার বিদ্যা, বুদ্ধির দৌড় কত, তাহা সকলে, স্ব স্ব প্রতিভাবলে, অনায়াসে উপলব্ধি করিতে পারেন।

 আমার প্রথম, বংধর, “অতি অল্প হইল”, ভুমিষ্ঠ হইলে, কেই কেহ, সন্দেহ করিয়া, কোনও মহোদয়কে জিজ্ঞাসা করিতেন, এই পুস্তক খানি কি আপনকার লিখিত? তিনি, কোনও উত্তর না দিয়া, ঈষৎ হাসিয়া, মৌনাবলম্বন করিয়া থাকিতেন। তাহাতে অনেকে মনে করিতেন, তবে ইহা ইঁহারই লিখিত। বিদ্যাসাগর মহাদয় সেরূপ চালাকি খেলেন কি না, ইহা জানিবার জন্য, এ বার আমি, চতুর, চালাক, বিশ্বস্ত বন্ধুবিশেষ দ্বারা, তাঁহার নিকট ঐরূপ জিজ্ঞাসা করাইব। দেখি, তিনি, পুর্ব্বোক্ত মহোদয়ের মত, ঈষৎ হাসিয়া, মৌনাবলম্বন করিয়া থাকেন; অথবা, আমার লিখিত নয় বলিয়া, স্পষ্ট বাক্যে উত্তর দেন। যেরূপ শুনিতে পাই, তাহাতে তিনি, “না বিইয়া কানাইর মা” হইতে চাহিবেন, সে ধরনের জন্তু নহেন।

 অধিকন্তু, তিনি, ভাল লেখক বলিয়া, এক সময়ে, বিলক্ষণ প্রতিষ্ঠালাভ করিয়াছিলেন, সত্য বটে। কিন্তু, যে অবধি, আমি প্রভৃতি কতিপয় উচ্চ দরের লেখকচূড়ামণি, সাহিত্যরঙ্গভূমিতে অবতীর্ণ হইয়া, নানা রঙ্গে, অভিনয় করিতে আরম্ভ করিয়াছি, সেই অবধি, তাঁহার লেখার আর তেমন গুমর নাই। ফলকথা এই, তিনি প্রভৃতি প্রাচীন দলের লেখকদিগের ভোঁতা কলমের খোঁতা মুখ হইতে, এবংবিধ রঙ‍্দার মহাকাব্য নিঃসৃত হওয়া, গোময়কুণ্ডে কমলোৎপত্তির ন্যায়, কোনও মতে সম্ভব নহে।

 যথাবিহিত যাহা অভিহিত হইল, ইহাতে যদি প্রাচীন দলের অভিমানী লেখক মহোদয়েরা রাগ করেন, করুন। আমার হাতে কিছুই বহিয়া যাইবেক না। আমি, এ সকল বিষয়ে, কাহারও তুআক্কা রাখি না, ও রাখিতেও চাহি না। এ জন্যে, যদি আমায় নরকে যাইতে হয়, আমি তাহাতেও পিছপাঁও নই।

 যদি বলেন, নরক কেমন সুখের স্থান, সে বোধ থাকিলে, তুমি, কখনই, নরকে যাইতে চাইতে না। এ বিষয়ে বক্তব্য এই, কিছু দিন পুর্ব্বে, কলিকাতায়, এক ভদ্রসন্তান বেয়াড়া ইয়ার হইয়াছিলেন। তিনি এক বারে উচ্ছন্ন যাইতেছেন ভাবিয়া, তাঁহার গুরুদেব, উপদেশ দিয়া, তাঁহাকে দুরস্ত করিবার চেষ্টা পাইয়াছিলেন। ‘তোমার কি নরকে যাইবার ভয় নাই’, গুরুদেব এই কথা বলিলে, সেই সুবোধ, সুশীল, বিনয়ী ভদ্রসন্তান কহিয়াছিলেন, 'আপনি দেখুন, যত প্রবলপ্রতাপ রাজা রাজড়া, সব নরকে যাইবেন; যত ধনে মানে পুর্ণ বড় লোক, সব নরকে যাইবেন; যত দিলদরিয়া, তুখড় ইয়ার, সব নরকে যাইবেন। যত মৃদুভাষিণী, চারুহাসিনী, বারবিলাসিনী, সব নরকে যাইবেন; স্বর্গে যাইবার মধ্যে, কেবল আপনাদের মত টিকিকাটা বিদ্যাবাগীশের পাল। সুতরাং, অতঃপর নরকই গুল‍্জার এবং, নরকে যাওয়াই সর্ব্বাংশে বাঞ্ছনীয়। আমারও সেই উত্তর।

 কিন্তু, একটি বিষয়ে, উক্ত ভদ্রসন্তানের মতের সহিত, আমার মতের সম্পূর্ণ বৈলক্ষণ্য আছে। তিনি কহিয়াছিলেন, টিকিকাটা বিদ্যাবাগীশের পাল স্বর্গে যাইবেন। আমার কিন্তু দৃঢ় বিশ্বাস এই, যদি নরক নামে বাস্তবিক কোনও স্থান থাকে। এবং, কাহারও পক্ষে, সেই নরকপদবাচ্য স্থানে যাইবার ব্যবস্থা থাকে; তাহা হইলে, টিকিকাটা বিদ্যাবাগীশের পাল সর্ব্বাগ্রে নরকে যাইবেন, এবং নরকের সকল জায়গা দখল করিয়া ফেলিবেন; আমরা আর সেখানে স্থান পাইব না।

 শ্রীমান্ বিদ্যাবাগীশ খুড় মহাশয়েরা, শাস্ত্রের দোহাই দিয়া, মনগড়া বচন পড়িয়া, বলিয়া থাকেন, জ্ঞানকৃত পাপের নিষ্কৃতি নাই। বিষয়ী লোক শাস্ত্রজ্ঞ নহেন; সুতরাং, তাঁহাদের অধিকাংশ পাপ, জ্ঞানকৃত বলিয়া, পরিগণিত হইতে পারে না। কিন্তু, বিদ্যাবাগীশ খুড়দের, শাস্ত্রেও যেমন দখল, পাপেও তেমনই প্রবৃত্তি। সুতরাং, তাঁহাদের পাপের সংখ্যাও অধিক, এবং সমস্ত পাপই জ্ঞানকৃত। এমন স্থলে, তাঁহারাই নরক একচাটিয়া করিয়া ফেলিবেন, সে বিষয়ে অনুমাত্র সংশয় নাই। তাঁহারা, আমাদিগকে ভয় দেখাইবার জন্যে, নানা রঙ্ চড়াইয়া, বর্ণনা করিয়া, নরককে এমন ভয়ানক স্থান করিয়া তুলেন যে, শুনিলে হৃৎকম্প হয়, এবং, এক বারে হতাশ হইয়া পড়িতে হয়। কিন্তু, আপনাদের বেলায়, ‘মাকড় মারিলে থোকড় হয়’ বলিয়া, অবলীলা ক্রমে, সমস্ত পাপকর্ম্মে সম্পূর্ণ লিপ্ত হইয়া থাকেন। এ বিষরের অতি সুন্দর একটি উদাহরণ দর্শিত হইতেছে। কিছু কাল পূর্ব্বে, এই পরম পবিত্র গৌড়দেশে, কৃষ্ণহরি শিরোমণি নামে, এক সুপণ্ডিত অতি প্রসিদ্ধ কথক আবির্ভুত হইয়াছিলেন। যাঁহারা তাঁহার কথা শুনিতেন, সকলেই মোহিত হইতেন। এক মধ্যবয়স্কা বিধবা নারী, প্রত্যহ, তাঁহার কথা শুনিতে যাহিতেন। কথা শুনিয়া, এত মোহিত হইয়াছিলেন, যে তিনি, অবাধে, সন্ধ্যার পর, তাঁহাঁর বাসায় গিয়া, তদীয় পরিচর্য্যায় নিযুক্ত থাকিতেন। ক্রমে ক্রমে ঘনিষ্ঠতা জন্মিয়া, অবশেষে, ঐ বিধবা রমণী গুণমণি শিরোমণি মহাশয়ের প্রকৃত সেবাদাসী হইয়া পড়িলেন।

 এক দিন, শিরোমণি মহাশয়, ব্যাসাসনে আসীন হইয়া, স্ত্রীজাতির ব্যভিচার বিষয়ে অশেষবিধ দোষ কীর্ত্তন করিয়া, পরিশেষে কহিয়াছিলেন, ‘যে নারী পর পুরুযে উপগতা হয়, নরকে গিয়া, তাহাকে, অনন্ত কাল, যৎপরোনাস্তি শাস্তিভোগ করিতে হয়। নরকে এক লৌহময় শাল্মলি বৃক্ষ আছে। তাহার স্কন্ধ দেশ, অতি তীক্ষ্ণাগ্র দীর্ঘ কণ্টকে পরিপূর্ণ। যমদূতেরা, ব্যভিচারিণীকে, সেই ভয়ঙ্কর শাল্মলি বৃক্ষের নিকটে লইয়া গিয়া, বলে, তুমি, জীবদ্দশায়, প্রাণাধিকপ্রিয় উপপতিকে, নিরতিশয় প্রেমভরে, যেরূপ গাঢ় আলিঙ্গনদান করিতে; এক্ষণে, এই শাল্মলি বৃক্ষকে, উপপতি ভাবিয়া, সেইরূপ গাঢ় আলিঙ্গনদান কর। সে ভয়ে অগ্রসর হইতে না পারিলে, যমদূতেরা, যথাবিহিত প্রহার ও যথোচিত তিরস্কার করিয়া, বলপূর্ব্বক, তাহাকে আলিঙ্গন করায়; তাহার সর্ব্ব শরীর ক্ষত বিক্ষত হইয়া যায়; অবিশ্রান্ত শোণিতস্রাব হইতে থাকে; সে, যাতনায় অস্থির ও মৃতপ্রায় হইয়া, অতিকরুণ স্বরে, বিলাপ, পরিতাপ, ও অনুতাপ করিতে থাকে। এই সমস্ত অনুধাবন করিয়া, কোনও স্ত্রীলোকেরই, অকিঞ্চিৎকর, ক্ষণিক সুখের অভিলাষে, পর পুরুষে উপগতা হওয়া উচিত নহে’ ইত্যাদি।

 ব্যভিচারিণীর ভয়ানক শান্তিভোগবৃত্তান্ত শ্রবণে, কথকচূড়ামণি শিরোমণি মহাশয়ের সেবাদাসী, ভয়ে ও বিস্ময়ে অভিভূত হইয়া, প্রতিজ্ঞা করিলেন, ‘যাহা করিয়াছি, তাহার আর চারা নাই অতঃপর, আর আমি, প্রাণান্তেও, পর পুরুষে উপগত হইব না’। সে দিন, সন্ধ্যার পর, তিনি, পুর্ব্ববৎ, শিরোমণি মহাশয়ের আবাসে উপস্থিত হইয়া, যথাবৎ আর আর পরিচর্যা করিলেন; কিন্তু, অন্যান্য দিবসের মত, তাঁহার চরণসেবার জন্য, যথাসময়ে, তদীয় শয়নগৃহে প্রবেশ করিলেন না।

 শিরোমণি মহাশয়, কিয়ৎ ক্ষণ, অপেক্ষা করিলেন। অবশেষে, বিলম্ব দর্শনে, অধৈর্য্য হইয়া, তাহার নামগ্রহণ পূর্বক, বারংবার আহ্বান করিতে লাগিলেন। সেবাদাসী, গৃহমধ্যে প্রবিষ্ট না হইয়া, দ্বারদেশে দণ্ডায়মান রহিলেন; এবং, গলবস্ত্র ও কৃতাঞ্জলি হইয়া, গলদশ্রু লোচনে, শোকাকুল বচনে কহিলেন, “প্রভো। কৃপা করিয়া, আমায় ক্ষমা করুন। সিমুল গাছের উপাখ্যান গুনিয়া, আমি ভয়ে মরিয়া রহিয়াছি; আপনকার চরণসেবা করিতে, আর আমার, কোনও মতে, প্রবৃত্তি ও সাহস হইতেছে না। না জানিয়া যাহা করিয়াছি, তাহা হইতে কেমন করিয়া নিস্তার পাইব, সেই ভাবনায় অস্থির হইয়াছি’।

 সেবাদাসীর কথা শুনিয়া, পণ্ডিতচুড়ামণি শিরোমণি মহাশয় শয্যা হইতে গাত্রোখান করিলেন; এবং, দ্বারদেশে আসিয়া, সেবাদাসীর হস্তে ধরিয়া, সহাস্য মুখে কহিলেন, “আরে পাগলি! তুমি এই ভয়ে আজ শয্যায় যাইতেছ না? আমরা, পুর্ব্বাপর, যেরূপ বলিয়া আসিতেছি, আজও সেইরূপ বলিয়াছি। সিমুল গাছ, পূর্ব্বে, ঐরূপ ভয়ঙ্কর ছিল, যথার্থ বটে; কিন্তু, শরীরের ঘর্ষণে ঘর্ষণে, লৌহময় কণ্টক সকল ক্রমে ক্ষয় পাওয়াতে, সিমুল গাছ তেল হইয়া গিয়াছে; এখন, আলিঙ্গন করিলে, সর্ব্ব শরীর শীতল ও পুলকিত হয়”। এই বলিয়া, অভয়প্রদান ও প্রলোভনদর্শন পূর্ব্বক, শয্যায় লইয়া গিয়া, গুণমণি শিরোমণি মহাশয় তাঁহাকে, পুর্ব্ববৎ, চরণসেবায় প্রবৃত্ত করিলেন।

 পূর্ব্ব বারে, অমার্জ্জনীয় অনবধানদোষ বশতঃ,নির্দ্দেশ করিতে বিস্মৃত হইয়াছি, এজন্য, ক্ষমা প্রার্থনা পূর্ব্বক, বিনয়নম্র বচনে নিবেদন করিতেছি, বেঢপ বিদ্যাবাগীশ দলের যেরূপ গুণকীর্ত্তন করিলাম, তাহাতে কেহ এরূপ না ভাবেন, আমাদের মতে, ব্রাহ্মণ পণ্ডিত সম্প্রদায়ের সমস্ত লোকই একবিধ, তাঁহাদের মধ্যে ইতরবিশেষ নাই। আমরা, সরল হৃদয়ে, ধর্ম্মপ্রমাণ নির্দ্দেশ করিতেছি, ব্রাহ্মণ পণ্ডিত সম্প্রদায়ে এরূপ অনেক মহাশয় ব্যক্তি আছেন যে, তাঁহাদিগকে দেখিলে, ও তাঁহাদের সহিত আলাপ করিলে, অন্তঃকরণ প্রকৃত প্রীতিরসে পুর্ণ, ও প্রভূত ভক্তিরসে আর্দ্র, হয়। তাঁহারা, যশোহর ধর্ম্মরক্ষিণী সভার আজ্ঞাবহ দলের ন্যায়, বাহ্যজ্ঞানশূন্য নহেন। তাঁহাদের সদসদ্বিবেক, উচিতানুচিতবিবেচনা প্রভৃতি, এ কাল পর্যন্ত, লয় প্রাপ্ত হয় নাই। তুচ্ছ লাভের লোভে, অবলীলা ক্রমে, ধর্ম্মাধর্ম্মবিবেচনায় বিসর্জ্জন দিতে পারেন, তাঁহারা সেরূপ প্রকৃতি ও সেরূপ প্রবৃত্তি লইয়া জন্মগ্রহণ করেন নাই।

 সন ১২৯১ সাল।

 ২৫ আশ্বিন।

মাননীয় শ্রীযুক্ত বাবু তারাপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়

যশোহরহিন্দুধর্ম্মরক্ষিণীসভাসম্পাদক

মহাশয় সমীপেষু

 সবিনয়ং সবহুমানং নিবেদনম্

 গৌড় দেশের সর্ব্বপ্রধান সমাজ নবদ্বীপের সর্ব্বপ্রধান স্মার্ত্ত শ্রীল শ্রীযুক্ত ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন ভট্টাচার্য্য, বিধবাবিবাহের অশাস্ত্রীয়তা প্রতিপন্ন করিবার নিমিত্ত, শ্রীমতী যশোহরহিন্দুধর্ম্মরক্ষিণী সভার চতুর্থ সাংবৎসরিক অধিবেশনে, সংস্কৃত ভাষায় যে বক্তৃতা করিয়াছিলেন, সমাচারচন্দ্রিকানামক সংবাদপত্রের ৭৩ ভাগের ১২১ সংখ্যায়, তাহা মুদ্রিত হইয়াছে। এই চমৎকারিণী বক্তৃতা, যথোচিত যত্ন ও সবিশেষ অভিনিবেশ সহকারে, পাঠ করিয়া, আমার অন্তঃকরণে যে সমস্ত ভাবের আবির্ভাব হইয়াছে, তৎসমুদয়, লিপিবদ্ধ করিয়া, ব্রজবিলাস নামে, মুদ্রিত ও প্রচারিত করিলাম। গ্রন্থের অধিকতর গৌরববন্ধনবাসনায়, এই অপূর্ব্ব মহাকাব্য, শ্রীমতী যশোহরহিন্দুধর্ম্মরক্ষিণী সভা দেবীর অতিকমনীয় কোমলতম চরণকমলে, চন্দনচর্চ্চিত কুসুমাঞ্জলি স্বরূপ, সমর্পিত হইতেছে। আপনি, দয়া প্রদর্শন পুর্ব্বক, এই অতি অকিঞ্চিৎকর অথচ অতি মনোহর উপহারপ্রদানবার্ত্তা শ্রীমতী সভা দেবীর শ্রবণগোচর করিলে, আমি নিরতিশয় অনুগৃহীত হইব। কিমধিকেনেতি।

 সন ১১৯১ সাল

 ১লা আশ্বিন

অনুগ্রহপ্রত্যাশাপন্নস্য 
কস্যচিৎ উপযুক্ত ভাইপোস্য



পরিচ্ছেদসমূহ (মূল গ্রন্থে নেই)

সূচীপত্র

এই লেখাটি ১ জানুয়ারি ১৯২৯ সালের পূর্বে প্রকাশিত এবং বিশ্বব্যাপী পাবলিক ডোমেইনের অন্তর্ভুক্ত, কারণ উক্ত লেখকের মৃত্যুর পর কমপক্ষে ১০০ বছর অতিবাহিত হয়েছে অথবা লেখাটি ১০০ বছর আগে প্রকাশিত হয়েছে ।